তোমরা তোমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও, গিয়ে বল, ‘হে আমাদের পিতা! আপনার ছেলে চুরি করেছে। আমরা যেটুকু জানি তারই চাক্ষুষ বিবরণ দিচ্ছি, চোখের আড়ালের ঘটনা তত্ত্বাবধান করার ক্ষমতা আমাদের নেই।
আমরা যে জনপদে ছিলাম তার বাসিন্দাদের জিজ্ঞেস করুন আর যে কাফেলার সঙ্গে আমরা এসেছি তাদেরকেও, আমরা অবশ্যই সত্যবাদী।’
ই‘য়াকুব বলল, ‘না, বরং তোমরা নিজেরাই একটা কাহিনী সাজিয়ে নিয়ে এসেছ, কাজেই ধৈর্য ধারণই আমার জন্য শ্রেয়, সম্ভবতঃ আল্লাহ তাদেরকে একত্রে আমার কাছে এনে দেবেন। তিনি হলেন সর্বজ্ঞ, বড়ই প্রজ্ঞাময়।’
তিনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন আর বললেন, ‘ইউসুফের জন্য বড়ই পরিতাপ।’ শোকে দুঃখে তার দু’চোখ সাদা হয়ে গিয়েছিল, আর সে অস্ফুট মনস্তাপে ভুগছিল।
তারা বলল, ‘আল্লাহর শপথ! আপনি ইউসুফের স্মরণ ত্যাগ করবেন না যতক্ষণ না আপনি মুমূর্ষু হবেন কিংবা আপনি মৃত্যুবরণ করেন।
সে বলল, ‘আমি আমার দুঃখ বেদনা আল্লাহর কাছেই নিবেদন করছি, আর আমি আল্লাহর নিকট হতে যা জানি, তোমরা তা জান না।
হে আমার ছেলেরা! তোমরা যাও, গিয়ে ইউসুফ আর তার ভাইয়ের খোঁজ খবর লও, আল্লাহর রহমাত থেকে নিরাশ হয়ো না, কেননা কাফির সম্প্রদায় ছাড়া আল্লাহর রহমাত হতে কেউ নিরাশ হয় না।’
যখন তারা ইউসুফের দরবারে উপস্থিত হল, তারা বলল, ‘হে আযীয! আমাদেরকে আর আমাদের পরিবারবর্গকে বিপদে ঘিরে ধরেছে, আর আমরা স্বল্প পুঁজি নিয়ে এসেছি, আমাদেরকে পূর্ণ ওজনের শষ্য দিন আর আমাদেরকে দান খায়রাত করুন। আল্লাহ দানশীলদেরকে পুরস্কৃত করেন।’
সে বলল, ‘তোমরা কি জান তোমরা ইউসুফ আর তার ভাইয়ের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেছিলে, যখন তোমরা অজ্ঞ-মূর্খ ছিলে?’
তারা বলল, ‘তাহলে তুমিই কি ইউসুফ?’ সে বলল, ‘আমিই ইউসুফ আর এটা হল আমার ভাই। আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে আর ধৈর্যধারণ করে এমন সৎকর্মশীলদের কর্মফল আল্লাহ কক্ষনো বিনষ্ট করেন না।’